যশোরের মনিরামপুর উপজেলার ১৪ নং দুর্বাডাঙ্গা ইউনিয়নের কোনাকোলা গ্রামের মৃত হাসেম আলী ওরফে (গেদু) গাজীর ছেলে বাবুর আলী গাজী (কাঠ ব্যবসায়ী বাবু) দীর্ঘদিন ধরে দুই সন্তানের জননী স্ত্রী সালমা বেগমের উপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করে আসছে।

নির্যাতনের কারণে সালমা বেগম অসুস্থ হয়ে পড়েন তার অসুস্থতাকে কেন্দ্র করে ২য় বিয়ে করে স্বামী বাবুর আলী এক পর্যায়ে দ্বিতীয় পক্ষকে তার বসত ভিটায় আনার পাইতারা করতে থাকে এবং বিভিন্ন সময়ে স্ত্রী সালমা বেগমের উপরে হামলা করেন এবং তার ব্যবহৃত কাপড় আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়ে তার প্রাণনাশ করার হুমকি দেয়। বাবুর আলীর এমন ব্যবহারে স্ত্রী সালমা ঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়ে তার প্রতিবেশীদের বাড়িতে আশ্রয় নেই সেখানেও রেহাই মেলেনি তার সারা এলাকা তন্ন তন্ন করে খুঁজে বের করে নিয়ে মারপিট করে।

এদিকে সালমা বেগম ও দুই সন্তানের ভবিষ্যৎ সুখের করে তোলার জন্য সালমা বেগমের নামে এক বিঘা জমি কেনেন বাবুর আলী। বর্তমানে দ্বিতীয় বিয়ে করায় বউয়ের গর্ভে সন্তান ধারণ করে আল্ট্রাসোনো করে দেখা যায় গর্ভের সন্তানটি ছেলে সন্তান এমতাবস্থায় দ্বিতীয় বউ ও গর্ভের সন্তানকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য বাবুর আলী আবারো প্রথম স্ত্রী সালমা বেগমের ওপর চড়াও হয় এবং তাকে ঘরের ভিতরে নিয়ে তার নামে দেওয়া জমি দ্বিতীয় স্ত্রী ও সন্তানের নামে লিখে দিতে বলে, না দিলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করার হুমকি দেয় এ অবস্থায় সালমা বেগম তার হাত থেকে বাঁচার জন্য জমি লিখে দিতে রাজি হন তারপর বাবুর আলী ঘরের দরজা খুলে দিয়ে দ্বিতীয় বউ এর কাছে চলে যান তার হাত থেকে বাঁচতে এক সপ্তাহ ধরে আশপাশের বাগান, কবরস্থানসহ ধানক্ষেতে পালানোর এক সপ্তাহ পর গতকাল দ্বিতীয় বউকে বাড়িতে উঠিয়ে সেই বউকে দিয়ে ফোন করিয়ে বাড়িতে ডেকে নিয়ে আসে সালমা বেগমকে। নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে প্রথমে বাড়িতে যেতে অস্বীকার করে সালমা বেগম, দ্বিতীয় স্ত্রী তাকে ফোন করে বিভিন্ন কায়দায় ফুঁসলিয়ে বাড়ি নিয়ে যায়।

তিনি বাড়িতে পৌঁছালে দ্বিতীয় স্ত্রী সালমা বেগমের চুল টেনে ধরে এলোপাতাড়ি মারপিট করে এবং স্বামী বাবুর আলী বলে তোকে আর দুনিয়া দেখতে দেব না তোর চোখ কানা করে দিবো তাই বলে সালমা বেগমের চোখের ভিতর আঙ্গুল ঢুকিয়ে দেয় এক পর্যায়ে চিৎকার করতে থাকে। তার চিৎকারে এলাকাবাসী ছুটে এসে উদ্ধার করে তার বাবা ও ভাইদের ফোন করে খবর দেয় খবর পেয়ে তারা ঘটনা স্থলে পৌঁছালে স্বামী বাবুর আলী তাদের উপর চড়াও হয়ে দাঁ দিয়ে কোপাতে যায়।

পরিস্থিতি সামলাতে তারা ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে পুলিশে খবর দেয় তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে স্বামী বাবুর আলী গাজী পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে সালমা বেগমকে জরুরী চিকিৎসা দেওয়ার জন্য নিকটস্থ হাসপাতালে ভর্তি করার কথা বলেন। কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে যশোর সদরে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সদরে নিয়ে যাওয়ার পর সেখানে কোন চিকিৎসা হবে না জানিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ঢাকা চক্ষু বিজ্ঞান হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয় সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এমতাবস্থায় সালমা বেগমের স্বজনদের আর্থিক অবস্থা সচল না থাকায় খুলনা চক্ষু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ সেবন ও চোখের যত্ন নিতে বলেন এবং তিনি বলেন ঢাকা ছাড়া তার চোখের ভালো চিকিৎসা করানো সম্ভব নয়। এদিকে স্বামী বাবুর আলীর বিরুদ্ধে মনিরামপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

স্বামী বাবুর আলী